Classification of Computer: Analog, Digital, Hybrid, Super, Mainframe, Mini, Micro....
গঠন ও ক্রিয়া নীতির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারকে মূলত তিনভাগে বাগ করা যায়। যথাঃ
১। এনালগ কম্পিউটার
২। হাইব্রিড কম্পিউটার
৩। ডিজিটাল কম্পিউটার
ডিজিটাল কম্পিউটারকে আবার চারভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
১। সুপার কম্পিউটার
২। মেইনফ্রেম কম্পিউটার
৩। মিনিফ্রেম কম্পিউটার
৪। মাইক্রোকম্পিউটার
মাইক্রোকম্পিউটারকে আবার পাঁচভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
১। ডেক্সটপ
২। ল্যাপটপ
৩। নেটবুক
৪। ট্যাবলেট পিসি
৫। পামটপ
এনালগ কম্পিউটার (Analog Computer)
যে সকল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সংকেতের ওপর নির্ভর করে ইনপুট গ্রহণ করে প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পাদিত করে, সেসব কম্পিউটারকে এনালগ কম্পিউটার বলে। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের সুবিধার জন্য এনালগ কম্পিউটারে বর্ণ বা অংকের পরিবর্তে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল বা এনালগ বৈদ্যুতিক সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল মিটার, ওসিলোসকোপ ইত্যাদিতে প্রদর্শিত হয়। মোটরগাড়ির স্পিডোমিটার, স্লাইড রুল, অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার ইত্যাদি অ্যানালগ কম্পিউটারের উদাহরণ।
ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)
যেসকল কম্পিউটার বাইনারি পদ্ধতিতে অর্থাৎ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্রিয়া সম্পাদন করে, সেসব কম্পিউটারকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলে। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য ডিজিটাল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সিগন্যালের পরিবর্তে ডিজিট (০/১) ব্যবহার করে। ডিজিটাল কম্পিউটারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মনিটরে প্রদর্শিত হয়। ডিজিটাল কম্পিউটারের গতি ও কার্যকারিতা অ্যানালগ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক বেশি ও ভালো। আবার ডিজিটাল কম্পিউটারের ফলাফলের সূক্ষ্মতা অ্যানালগ কম্পিউটারের তুলনায় অনেক বেশি। বর্তমান বাজারে প্রচলিত প্রায় সকল কম্পিউটার ডিজিটাল পদ্ধতির কম্পিউটার।
হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer)
হাইব্রিড কম্পিউটার হচ্ছে এনালগ এবং ডিজিটাল উভয় পদ্ধতির সমন্বয়। ইনপুট এনালগ প্রকৃতির এবং আউটপুট ডিজিটাল প্রকৃতির। একে সংকর কম্পিউটারও বলা হয়। হাইব্রিড কম্পিউটার অত্যন্ত দামী। তাই কেবলমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়; যেমন- মিসাইল, সমরাস্ত্র, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, নভোযান, রাসায়নিক দ্রব্যের গুণাগুণ নির্ণয়, পরমাণুর গঠন-প্রকৃতি নির্ণয়, পরীক্ষাগারে ঔষধের মান নির্ণয় ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার, শরীরের তাপমাত্রা, রোগীর রক্তচাপ, হৃদযন্রের ক্রিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ ধরণের কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সুপার কম্পিউটার (Super Computer)
ক্ষমতা-আকৃতি ইত্যাদির ভিত্তিতে অতি বড় কম্পিউটারকে বলা হয় সুপার কম্পিউটার। এ কম্পিউটার অত্যন্ত শক্তিশালী এবং অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। কম্পিউটারটি প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন হিসাব করতে সক্ষম। সূষ্ম বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিপুল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ, নভোযান, জঙ্গী বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং মহাকাশ গবেষণা ইত্যাদি কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার যথাক্রমে জাপানের Fugaku, যুক্তরাষ্ট্রের Summit, Sierra, চীনের Sunway, TaihuLight, ভারতের 'পরম' ইত্যাদি।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)
সুপার কম্পিউটারের চেয়ে ছোট আকারের কিন্তু পার্সোনাল বা মাইক্রোকম্পিউটার নয়, সেসব কম্পিউটারকে বলা হয় মেইনফ্রেম কম্পিউটার। মেইনফ্রেম কম্পিউটার হচ্ছে এমন একটি বড় কম্পিউটার যার সঙ্গে অনেকগুলো কম্পিউটার বা ডাম্ব টার্মিনাল যুক্ত করে এক সঙ্গে অনেক মানুষ কাজ করে পারে। ব্যাংক, বীমা, অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক কর্ম তৎপরতা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
মিনি কম্পিউটার (Mini Computer)
মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট আকারের কিন্তু পার্সোনাল কম্পিউটারের চেয়ে বড় আকারের কম্পিউটারকে মিনি কম্পিউটার বা মধ্যম সারির কম্পিউটার বলা হয়। মেইনফ্রেম এবং মিনি কম্পিউটারে একই ধরনের কাজ করা যায়। তবে মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে মিনি কম্পিউটার আকারে ছোট এবং কাজের ক্ষমতাও অনেক কম। যদিও কিছু মিনি কম্পিউটার একজন ব্যবহারকারীর ব্যবহরের উপযুক্ত, তবে বেশিরভাগ মিনি কম্পিউটারেই একই সাথে অনেকগুলো টার্মিনালে কাজ করা যায়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক, হাসপাতাল, বড় বড় কারখানা, বহুজাতিক কোম্পানি, প্রযুক্তিগত গবেষণা ও বিশ্লেষণ কাজে মিনি কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
PDP-II, IBM S/34, IBM S/36, NCR S/9290, NOVA3 ইত্যাদি মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ।
মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer)
মেইনফ্রেম বা মিনি কম্পিউটারের তুলনায় মাইক্রোকম্পিউটারের আকার অনেকগুণ ছোট। সাধারণত একজন ব্যবহারকারী একা একটি মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন। এজন্য মাইক্রোকম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার (Personal Computer) বা সংক্ষেপে শুধু পিসি (PC) বলা হয়। মাইক্রোকম্পিউটার হচ্ছে কারিগরি নাম, আর পার্সোনাল কমৃপিউটার হচ্ছে চলতি নাম।
১৯৭৫ সালে তড়িৎ প্রকৌশলী হেনরি এডওয়ার্ড রবার্ট কর্তৃক ডিজাইনকৃত Altair-880 কে প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর ভিত্তিক মাইক্রোকম্পিউটার হিসেবে গণ্য করা হয়। এজন্য হেনরি এডওয়ার্ড রবার্টকে মাইক্রোকম্পিউটারের জনক বলা হয়।
ডেক্সটপ (Desktop)
এ জাতীয় কম্পিউটার ডেক্সে বা টেবিলে স্থাপন করা যায় বলে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।
ল্যাপটপ (Laptop)
১৯৮১ সালে এপসম কোম্পানি প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রবর্তন করেন। Lap অর্থাৎ কোলের ওপর স্থাপন করে কাজ করা যায়, এমন ছোট আকারের কম্পিউটারকে ল্যাপটপ বলা হয়। ল্যাপটপ কম্পিউটার দেখতে অনেকটা ছোট ব্রিটকেসের মতো যার ওপরের অংশে থাকে একটি সমতল এলসিডি বা এলইডি স্ক্রিন এবং নিচের অংশে থাকে কি-বোর্ড, পাওয়ার বাটন এবং টাচপ্যাড। এতে মাউসের পরিবর্তে টাচপ্যাড ব্যবহার করা হয়। ল্যাপটপ কম্পিউটার পাওয়ার বুক ইত্যাদি নামেও পরিচিত। দেখতে স্মার্ট, ওজনে হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়ায় দিন দিন ল্যাপটপের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রিচার্জেবল ব্যাটারি বা এসি অ্যাডাপ্টার ল্যাপটপে থাকার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলে এটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চালানো যায়।
নোটবুক (Notebook)
নোটবুক কম্পিউটার সাধারণত ল্যাপটপ কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট এবং ওজন কম হওয়ায় সহজে বহনযোগ্য। এটি দেখতে অনেকটা নোটবুকের ন্যায় বিধায় এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। এ ধরণের কম্পিউটারগুলোতে কি-বোর্ড, পাওয়ার বাটন, টাচপ্যাড, এবং ডিসপ্লে হিসেবে এলসিডি বা এলইডি যুক্ত থাকে। কিন্তু কোনো প্রকার অপটিক্যাল ডিস্ক ড্রাইভ থাকে না।
পামটপ (Palmtop)
পামটপ এর পুরো নাম হলো Personal Digital Assistants. ১৯৯৩ সালে ইলেকট্রনিক নির্মাতারা Personal Digital Assistants তৈরি করেন। PDA এর প্রাথমিক ভার্সন ছিল অ্যাপলের 'নিউটন'। এ ধরনের কম্পিউটার ক্ষুদ্রাকৃতির এবং দেখতে অনেকটা ক্যালকুলেটরের ন্যায়, যা হাতের তালুর মধ্যে রেখে ব্যবহার করা যায়, এমনকি পকেটে রেখে সহজে বহন করা যায়। এটি পকেট কম্পিউটার নামেও পরিচিত। এ ধরনের কম্পিউটারগুলোতে কোনো প্রকার ডিস্ক ড্রাইভ থাকে না। সাধারণত টাচ স্ক্রিন ও ডিজিটাল পেনের সাহায্যে এ জাতীয় কম্পিউটারগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব (Tablet PC or Tab)
ট্যাবলেট পিসি লেটার সাইজের স্লেটের অনুরূপ এক ধরণের কম্পিউটার যার স্ক্রীনে হাতের আঙ্গুল স্পর্শ করে সমজাতীয় নির্দেশ বা ডেটা প্রদান করা অথবা ডিজিটাল কলম দিয়ে লেখা বা ড্রয়িং করা যায়। ট্যাবলেট পিসিতে ভয়েস ইনপুট ব্যবস্থা থাকে যার সাহায্যে ব্যবহারকারী কথা বলার মাধ্যমে কম্পিউটারের নির্দেশ বা ডেটা ইনপুট করতে পারেন।
Comments