History of Computer in Bangladesh

বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র, ঢাকায়। এটি ছিল IBM কোম্পানির ১৬২০ সিরিজের দ্বিতীয় প্রজন্মের একটি  মেইনফ্রেম কম্পিউটার। ঢাকা পরমাণু শক্তি কেন্দ্রে সুদীর্ঘ কয়েক বছর এই কম্পিউটারটি চালু ছিল। বর্তমানে এই কম্পিউটারটি ঢাকার আাগারগাঁও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ষাটের দশকের শেষ দিকে তদানীন্তন হাবিব ব্যাংক IBM 1401 এবং ইউনাইটেড ব্যাংক IBM 1901 মেইনফ্রেম কম্পিউটার স্থাপন করে। কম্পিউটার চর্চাকে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯১ সাল থেকে প্রকাশিত হতে শুরু করে দেশের কম্পিউটার বিষয়ক প্রথম পত্রিকা মাসিক 'কম্পিউটার জগৎ'।

বাংলায় ওয়ার্ড প্রসেসিং
কম্পিউটারে প্রথম বাংলা লেখা সম্ভব হয় ১৯৮৭ সালে এবং এ সাফল্যের কৃতিত্ব মাইনুল ইসলাম নামের এক প্রকৌশলীর। তিনি নিজের উদ্ভাবিত বাংলা ফন্ট 'মাইনুলিপি' ব্যবহার করে অ্যাপেল ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখার ব্যবস্থা করেন। এ ক্ষেত্রে বাংলার জন্য আলাদা কোনো কী-বোর্ড ব্যবহার না করে ইংরেজি দিয়েই কাজ চালানো হয়েছিল। 

বাংলা কী-বোর্ড
১৯৮৮ সালে আনন্দ কম্পিউটার্স নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে তৈরি করা হয় অ্যাপেল ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে ব্যবহার উপযোগী প্রথম ইন্টারফেস 'বিজয়'। এ সময়ই প্রথম বাংলা কী-বোর্ড লে-আউট করা হয়। ১৯৯৩ সালে বাংলা ফন্ট ও বাংলা কী-বোর্ডকে IBM কম্পিউটারের আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম 'মাইক্রোসফট উইন্ডোজ' এর সঙ্গে ব্যবহারের জন ইন্টারফেস 'বিজয়' উদ্ভাবিত হয়। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বাংলা কী-বোর্ড হলো বিজয়। বিজয় কী-বোর্ডের স্বত্বাধিকারী হলেন মোস্তফা জব্বার। 

কম্পিউটারে বিজয় বাংলা প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকলে স্ট্যাটাসবারে একটি বিশেষ আইকন প্রদর্শিত হয়। এই আইকনের একটি নীল-সাদা-লাল রং এর ডায়মন্ড প্রতীক অবস্থা ইংরেজি কী-বোর্ড লেআউট এবং বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধের মতো ত্রিভুজ আকৃতির প্রতীক অবস্থা বাংলা কী-বোর্ড লেআউট নির্বাচন নির্দেশ করে। এই আইকনে মাউস ক্লিক করে কিংবা Alt+Ctrl+B কী তিনটি একত্রে চেপে কী-বোর্ডের এক লেআউট থেকে অন্য লেআউট এ পরিবর্তন করা যায়।
বাংলা লেআউটে কী-বোর্ডে
ইংরেজি J চাপলে বাংলা ক,
Shift +J চাপলে বাংলা খ,
ইংরেজি O চাপলে বাংলা গ বর্ণ,
Shift + O চাপলে বাংলা ঘ বর্ণ,
ইংরেজি Q চাপলে বাংলা ঙ বর্ণ,
Shift + Q চাপলে বাংলা ং বর্ণ,
ইংরেজি Y চাপলে বাংলা চ বর্ণ,
Shift + Y চাপলে বাংলা ছ বণ,
ইংরেজি U চাপলে বাংলা জ বর্ণ,
Shift + U চাপলে বাংলা ঝ বর্ণ,
ইংরেজি B চাপলে বাংলা ন,
SHIFT+B চাপলে বাংলা ণ , 
ইংরেজি R চাপলে বাংলা প বর্ণ,
ইংরেজি L চাপলে বাংলা দ বর্ণ,
ইংরেজি K চাপলে বাংলা ত বর্ণ, 
 ইত্যাদি লেখা হয়।

বাংলা স্বরবর্ণ ও যুক্তাক্ষর তৈরি করার জন্য একটি লিঙ্ক বোতাম ব্যবহার করতে হয়। ইংরেজি G বোতামটি লিঙ্ক বোতাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলা অ এবং ও ছাড়া অন্যান্য স্বরবর্ণ পেতে হলে প্রথমে লিঙ্ক বোতাম (G) চাপার পর সংশ্লিষ্ট স্বরচিহ্নটি চাপতে হবে।

অভ্র কী-বোর্ড
২০০৩ সালে ড. মেহদি হাসান খান অভ্র কীবোর্ড উদ্ভাবন করেন। অভ্র কীবোর্ড হলো Microsoft Windows, MacOS, Ubunto, এবং Linux এ গ্রাফিক্যাল লেআউট পরিবর্তক এবং Unicode ও ANSI সমর্থিত বাংলা লেখার মিনামূল্যের একটি সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যারটির অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এতে ফোনেটিক (ইংরেজি উচ্চারণ করে বাংলা লেখা) পদ্ধতিতে বাংলা লেখা যায়।

বাংলা ফন্ট
সুতন্বী (Sutonyn) হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা ফ্রন্ট। অন্যান্য ফ্রন্টের মধ্যে রয়েছে
⇨ আদর্শলিপি
⇨ আনন্দপত্র
⇨ বসুন্ধরা
⇨ চন্দ্রাবতী
⇨ একুশ
⇨ একুশে
⇨ ফাল্গুন
⇨ কর্ণফুলি
⇨ লিপি
⇨ লেখনি
⇨ মধুমতি
⇨ রিনকি
⇨ সুলেখা
⇨ সারদা
⇨ সুশ্রী ইত্যাদি
'আমার বর্ণমালা' সরকারি উদ্যোগে তৈরি ইউনিকোড সুবিধাযুক্ত বাংলা ফন্ট।

কম্পিউটারভিত্তিক সংগঠন
Bangladesh Association of Software and Information Services (BASIS) বাংলাদেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের একটি সংস্থা যা জাতীয়ভাবে সফটওয়্যার ও তথ্য প্রযুক্তির বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

N.B: দৃষ্টিহীনদের জন্য আবিষ্কৃত বাংলায় প্রথম সফটওয়্যার হলো আই সাইট।
বাংলাদেশের প্রথম প্রোগ্রাম হলেন হামিদ উদ্দিন মিয়া।

Comments