Microprocessor

Microprocessor


মাইক্রোপ্রসেসর হলো সিলিকনের তৈরি এক ধরণের VLSI (Very Large Scale Integration) চিপ। একটি একক VLSI চিপের মধ্যে এক মিলিয়নেরও অধিক ডায়োড, ট্রানজিস্টর, রেজিস্টার, ক্যাপাসিটর ইত্যাদি একীভূত থাকে। মাইক্টোপ্রসেসর মাইক্রোকম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ হিসেবে কাজ করে। মাইক্রোপ্রসেসরকেই মাইক্রোকম্পিউটারের মস্তিস্ক বা ব্রেইন বলা হয়।

মাইক্রোপ্রসেসরের নামকরণঃ
বিটের সংখ্যার উপর মাইক্রোপ্রসেসরের নামকরণ করা হয়ে থাকে। যেমনঃ
৪ বিট মাইক্রোপ্রসেসরঃ ৪০০৪, ৪০৪০
৮ বিট মাইক্রোপ্রসেসরঃ ৮০০৮, ৮০৮০
১৬ বিট মাইক্রোপ্রসেসরঃ ৮০৮৬, ৮০৮৮, ৮০১৮৬, ৮০২৮৬
৩২ বিট মাইক্রোপ্রসেসরঃ ৮০৩৮৬, ৮০৪৮৬, Intel Pentium, AMD K6, AMD Athlon
৬৪ বিট মাইক্রোপ্রসেসরঃ Intel Core i3, i5, i7, i9, Intel ITANIUM

মাইক্রোপ্রসেসরের শ্রেণিবিভাগঃ
বর্তমানে প্রচলিত মাইক্রোপ্রসেসর সাধারণভাবে নিম্নোক্ত তিনভাগে ভাগ করা যায়ঃ
১। CISC Processor: তুলনামূলকভাবে জটিল ইনস্ট্রাকশন ব্যবহার করা হয়। এসেম্বলি ভাষায় প্রোগ্রামিং এর জন্য বেশী উপযোগী।
২। RISC Processor: সরল ও ছোট মোডের ইনস্ট্রাকশন ব্যবহার করা হয়। উচ্চতর ভাষায় রোগ্রামিং এর জন্য বেশি উপযোগী। উদাহরণঃ Power PC, ARM, AVR, ARC ইত্যাদি
৩। বিশেষ ব্যবহার কার্যের প্রসেসর

CISC = Complex Instruction Set Computing
RISC = Reduced Instruction Set Computing

মাইক্রোপ্রসেসর তৈরির প্রতিষ্ঠানসমূহঃ
বিভিন্ন ধরণের মাইক্রোপ্রসেসর তৈরিতে বিশ্বের বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো Intel Corporation, Motorola, IBM, AMD (Advanced Micro Devices), Cyrix, TI (Texas Instrument), NVidia, Qualcomm ইত্যাদি।

মাইক্রোপ্রসেসরের সংগঠনঃ
মাইক্রোপ্রসেসর প্রধানত তিনটি অংশে বিভক্ত। যথা-
ক) নিয়ন্ত্রণ ইউনিট (Control Unit-CU)
খ) গাণিতিক যুক্তি ইউনিট (Arithmetic Logic Unit-ALU)
গ) রেজিস্টারসমূহ (Register Set)

ক) Control Unit-CU:
কন্ট্রোল ইউনিট কম্পিউটারের সকল অংশকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার কাজে নিয়োজিত থাকে। কন্ট্রোল ইউনিট মানব মস্তিস্কের থ্যালামাসের মতো কাজ করে। এটি কম্পিউটারের প্রতিটি নির্দেশ পরীক্ষা করে এবং কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় সংকেত তৈরি করে। মেমোরিতে কখন তথ্যের প্রয়োজন হবে– সহায়ক মেমোরি হতে কখন প্রধান মেমোরিতে তথ্য নিতে হবে, কখন ইনপুট হতে উপাত্ত নিতে হবে, কখন ফলাফল দিতে হবে এসব বিষয় CU নিয়ন্ত্রণ করে। নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের কাজই হলো মেমোরি হতে ইনস্ট্রাকশন কোড পড়া ও ডিকোড করা এবং মাইক্রোপ্রসেসরের অন্য অংশসমূহকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় কন্ট্রোল সিগন্যাল তৈরি করা। যেমন-গাণিতিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য মাইক্রোপ্রসেসরের প্রয়োজনীয় যুক্তি অংশকে কন্ট্রোল সিগন্যালের মাধ্যমে নির্দেশ প্রদান করা।

খ) গাণিতিক যুক্তি ইউনিট-ALU
নিয়ন্ত্রণ অংশের তত্ত্বাবধানে ALU বিভিন্ন ধরণের গাণিতিক ও লজিক্যাল অপারেশনের কাজ সম্পাদন করে। বেশির ভাগ গাণিতিক অপারেশনগুলো হলো যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ এবং লজিক্যাল অপারেশনগুলো হলো তুলনা, সত্য-মিথ্যা যাচাই ইত্যাদি। আবার কোনো রেজিস্টার পরিস্কারকরণ এবং রেজিস্টারে সংরক্ষিত তথ্য বা সংখ্যাকে ডানে-বামে সরানো ইত্যাদি কাজও এ অংশের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। বিভিন্ন ধরণের ইলেক্ট্রনিক বর্তনীর সহায়তায় গাণিতিক যুক্তি অংশে এই কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে এবং প্রশোজনে ফলাফল অস্থায়ীভাবে রেজিস্টারে সংরক্ষিত রাখে।

গ) রেজিস্টারসমূহ
মূলত মাইক্রোপ্রসেসরের অস্থায়ী মেমোরি রেজিস্টার হিসেবে কাজ করে। রেজিস্টার তৈরি করা হয় ফ্লিপ-ফ্লপের মাধ্যমে। এগুলোর কাজ করার ক্ষমতা অত্যন্ত দ্রুত। মাইক্রোপ্রসেসর যখন হিসাব-নিকাশের কার্যাবলি সম্পাদন করে তখন ডেটাকে সাময়িকভাবে জমা রাখার জন্য রেজিস্টারসমূহ ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটারে ব্যবহৃত রেজিস্টারকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১) সাধারণ রেজিস্টার (General Register)
২) বিশেষ রেজিস্টার (Special Register)
 বিশেষ রেজিস্টারের কয়েয়কটি উদাহরণ তুলে ধরা হলোঃ
⇨ অ্যাকিউমুলেটর (Accumulator): গাণিতিক ও যুক্তিমূলক ইউনিটের প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল তাৎক্ষণিক অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য অ্যাকিউমুলেটর ব্যবহৃত হয়।
⇨ Program Counter Register: প্রোগ্রাম কাউন্টার রেজিস্টারে মেমোরি অ্যাড্রেসের পর্যায়ক্রম সংরক্ষিত থাকে বলে একে Sequence Control Register ও বলা হয়।
⇨ Memory Address Register
⇨ Instruction Register
⇨ Flag Register or Status Register
⇨ Memory Data Resister or Memory Buffer Register

Instruction Set:
মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে অনেক রকম উপাত্ত বা ডেটা প্রক্রিয়াকরণের কাজ করা হয়। Instruction Set হলো এসব কাজের জন্য ব্যবহৃত  নির্দেশের তালিকা। বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের ইনস্ট্রাকশন সেট ব্যবহৃত হয়। যেমন-
১) গাণিতিক নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন। য়েমন- ADD, SUB
২) যুক্তিমূলক নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন। যেমন-COMPARE
৩) ডেটা স্থানান্তর নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন। যেমন- MOV
৪) প্রোগ্রাম নিয়ন্ত্রণ নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন। যেমন- JUMP
৫) মেশিন নিয়ন্ত্রণ নির্দেশ বা ইনস্ট্রাকশন। যেমন- IN, INTO

Speed of Processor:
মাইক্রোকম্পিউটারের গতি বিবেচনা করা হয় মাইক্রোপ্রসেসরের Clock Speed এর দ্বারা। Clock Speed পরিমাপ করা হয় প্রতি সেকেন্ডে কতটি স্পন্দন (Pulse) বা টিক সম্পন্ন হয় তার উপর নির্ভর করে। স্পন্দন পরিমাপ করা হয়  Hartz এককে। প্রসেসরের ক্লকটি প্রতি সেকেন্ডে এক মিলিয়ন বার স্পন্দন বা টিক করার সময়কে ১ মেগাহার্টজ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই স্পন্দনকেই Clock Speed বলা হয়। সাধারণত মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটারের প্রসেসরের গতি পরিমাপ করা হয় MHz বা GHz এ। কিন্তু মিনি ও মেইনফ্রেম প্রসেসরের গতি পরিমাপ করা হয় MIPS (Millions of Instructions per Second) বা BIPS (,Billions of Instructions per second) এ।

Comments