Cyber Crime and Cyber Security
সাইবার অপরাধ (Cyber Crime)
সাইবার অপরাধ বলতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে অপরাধ করা হয়, তাকেই বোঝানো হয়। বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের জন্য 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ করা হয়েছে।
কম্পিউটার ভাইরাস (Computer Virus)
এটি এক ধরনের প্রোগ্রাম যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাহ, সংক্রমণ ও নিজস্ব সংখ্যাবৃদ্ধি করে। এই প্রোগ্রাম সিপিইউ কর্তৃক গ্রহণ করে কম্পিউটারকে অস্বাভাবিক, অগ্রহণযোগ্য এবং অস্বস্তিদায়ক কাজ করতে বাধ্য করে।
হ্যাকিং (Hacking)
সাধারণত অনুমতি ব্যতীত কোনো কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে কম্পিউটার ব্যবহার করা অথবা কোনো কম্পিউটারকেবমোহচ্চন্ন করে তার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়াকে হ্যাকিং বলে। যে হ্যাকিং করে তাকে হ্যাকার বলো। হ্যাকিং বৈধ এবং অবৈধ হতে পারে। কিছু প্রতিষৃঠান তাদের সিস্টেমের সিকিউরিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হ্যাকাট নিয়োগ করে। এই নিয়োগপ্রাপ্ত হ্যাকারকে বৈধ হ্যাকার বলে। এরা সিস্টেমের সিকিউরিটি চেক করে কিন্তু সিস্টেমের কোনো ক্ষতি করে না। অবৈধভাবে যারা হ্যকিং করে তাদের ক্রেকারও বলা হয়।
Spamming
ই-মেইল একাউন্টে প্রায়ই কিছু কিছু অচেনা ও অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল পাওয়া যায় যা আমাদের বিরক্তি ঘটায়। এই ধরনের ই-মেইলকে সাধারণত Spam মেইল বলে। আর যখন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কোনো নির্দিষ্ট একটি ই-মেইল অ্যাড্রেসে শতশত এমনকি লক্ষ লক্ষ মেইল প্ররণের মাধ্যমে মেমোরি দখল করে, তখন তাকে Spamming বলে।
Cyber Attack
এক ধরনের ইলেকট্রনিক আক্রমণ যাতে ক্রিমিনালরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য কারো সিস্টেমে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে ফাইল, প্রোগ্রাম বা হার্ডওয়্যার ধ্বংস বা ক্ষতিসাধন করে। একে সাইবার Vandalism ও বলা হয়।
সাইবার হয়রানি (Cyberstalking)
ই-মেইল বা ব্লগ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে হুমকি দেওয়া, ব্যক্তি নামে মিথ্যাচার বা অপপ্রচার, নারী অবমাননা, যৌন হয়রানি প্রভৃতি সাইবার হয়রানির অন্তর্ভুক্ত।
সাইবার চুরি (Cyber Theft)
Cyber theft দুইভাবে ঘটতে পারে। যথা-ডেটা চুরি (Data Theft) এবং ব্যক্তি পরিচয় চুরি (Identity Theft)। কোনো ব্যক্তি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমতি ব্যতীত ইনফরমেশন কপি আহরণ করাকে ডেটা চুরি বলা হয়।
পক্ষান্তরে এক ব্যক্তির পরিচয় ব্যবহার করে অন্য কোনো ব্যক্তি কিছু ক্রয় বা অন্য কোনো কর্মকাণ্ড করে তার দায়ভার প্রথমোক্ত ব্যক্তির উপর চাপানোকে ব্যক্তি পরিচয় চুরি বলে।
Phishing
Phishing বলতে প্রতারণার মাধ্যমে কারো কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ব্যবহারকারীর নাম ও পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডে তথ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করাকে বুঝায়। ই-মেইল ও ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজের মাধ্যমে সাধারণত ফিশিং করা হয়ে থাকে। লগ ইন বা অ্যাকসেস তথ্য চুরি বিশেষত ই-কমার্স বা ই-ব্যাংকিং সাইটগুলো ফিশারদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকে।
Piracy
সদ্য প্রকাশিত গান বা সিনেমার MP3 বা Movie file ইটারনেটে শেয়ার হয়ে যাচ্ছে। এটাকে Piracy বলে।
Plagiarism
অন্যের লেখা চুরি করে নিজের নামে উপস্থাপন বা প্রকাশ করাকেই বলা হয় Plagiarism। অর্থাৎ তথ্যসূত্র উল্লেখ ব্যতীত কোনো ছবি, অডিও, ভিডিও এবং তথ্য ব্যবহার করা অন্যায় কাজ ও অপরাধ হলো Plagiarism.
বাংলাদেশ ব্যাংকের একাউন্ট হ্যাকিং
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাউন্ট থেকে অজ্ঞাত হ্যাকাররা ভূয়া ট্রান্সফার ব্যবহার করে সুইফটের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে ১০ কোটি ১০ লক্ষ ডলার হাতিয়ে নেয়। এই অর্থের ২ কোটি ডলার যায় শ্রীলংকায় আর ৮ কোটি ১০ লক্ষ ডলার যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। ফিলিপাইনের রিজেল কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্পোরেশনের মাধ্যমে টাকাটি জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
SWIFT
SWIFT এর পূর্নরূপ হলো Society for Worldwide Interbank Financial Telecommunication.। SWIFT হলো তথ্য আদান-প্রদানের একটি সিকিউরড মাধ্যম। এই মাধ্যম বা নেটওয়ার্ক দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান করার জন্য সুইফট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার ও সেবা প্রদান করে থাকে। এটি BIC (Bank Identifier Codes) কোড নামেও পরিচিত। সুইফট কোড ৮ থকে ১১ ডিজিটের হয়। এক্ষেত্রে প্রথম ৪ ডিজিট ব্যাংক কোড, পরবর্তী ২ ডিজিট দেশের কোড এবং পরবর্তী ২ ডিজিট লোকেশন কোড বুঝায়। তাছাড়া ক্ষেত্র বিশেষে সুইফটের ১১ ডিজিটের শেষ ৩ ডিজিট শাখা কোড বুঝায়। SWIFT এর উদ্ভাবক Carl Reuterskiold । ১৯৭৩ সালে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে সুইফটের সদর দপ্তর স্থাপিত হয়।
সাইবার নিরাপত্তা (Cyber Security)
Back-up:
যেসকল ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণ উপাত্ত বা ডাটা সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণের কাজ করা হয়, ষ্সেসব ক্ষেত্রে বিকল্প পন্থা হিসেবে ডাটার হুবহু বা অবিকল কপি Back-up রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারণ এক্ষেত্রে কোনো কারণে সেকেন্ডারি সটোরেজ ডিভাইজ নষ্ট হয়ে গেলে বা ভাইরাসজনিত কারণে ডাটা হারিয়ে গেলে বা বিকৃত হলে ব্যাক আপ কপি থেকে ডেটাকে পুনরুদ্ধার করা যায়। সাধারণত স্ট্রেজ ডিভাইস যেমন ফ্লপি ডিস্ক, হার্ড ডিস্ক, পেন ড্রাইভ, কম্পাক্ট ডিস্ক, বা চৌম্বক টেপ এ ডাটা বা প্রোগ্রামের ব্যাক আপ করি রাখা যায়। ব্যাক আপ কমান্ডের সাহায্যে ডস এবং উইন্ডোজ উভয় পরিবেশে প্রোগ্রাম, ডেটা বা পুরো সিস্টেমকে ব্যাক আপ করা যায়। Restore কমান্ডের সাহায্যে ফাইল পুরুদ্ধার করা যায়।
Proxy Server
Proxy হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যা User ইন্টারনেটের সাথে পরোক্ষভাবে যুক্ত করে দেয়। আর যারা এই ধরনের সেবা দিয়ে থাকে, তারা হচ্ছে Proxy Server অর্থাৎ User ও কাঙ্ক্ষিত Web এর মাঝে অবস্থান করে Proxy Server । Proxy Server মাঝে অবস্থানের ফলে User ও কাঙ্ক্ষিত সাইটের মাঝে সরাসরি কোনো কানেকশন থাকে না। তাই User এর প্রকৃত তথ্য গোপন থাকে। সহজ ভাষায় Proxy Server এর মাধ্যমে আমরা নিজেদের তথ্য গোপন রেখে নেট ব্রাউজ করতে পারি।
Firewalls
Firewalls হচ্ছে এক সেট নিয়মনীতি বা রুলস যার সাহায্যে পিসিতে ইনকামিং এবং আউটগোয়িং ডেটাপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনে ফিল্টার করা যায়। ফায়ারওয়াল হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার দু'ধরনেরই হতে পারে। প্রতিনিয়ত ইন্টারনেটে হরেক রকমের বাগ (Bug) আবির্ভূত হচ্ছে এবং সেগুলো কম্পিউটারের অ্যাপ্লইকেশন প্রোগ্রাম ও ডেটা ধ্বংস করার জন্য ওৎ পেতে আছে। কম্পিউটার সিস্টেমকে সম্ভাব্য এ সব আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে Firewall প্রযুক্তি একটি উত্তম অবস্থা। ফায়ারওয়্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে কম্পিউটারকে হ্যাকারদের আক্রমণ থেকে সহজেই আড়াল করা যায়।
অনাদিষ্ট (Unauthorized) বা অবাঞ্ছিত ব্যবহারকারীর হাত থেকে সিস্টেম রক্ষা করা বা সাইবার আক্রমণ এড়াতে ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য ফায়ারওয়াল হলো অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের মাঝে একটি কম্পিউটার বা রাউটার ব্যবহার করে সমস্ত ট্রাফিক পর্যবেক্ষণ বা নিয়ন্ত্রণ করা।
Comments